গুগল ক্লাসরুম কি? যেভাবে ব্যবহার করবেন!

গুগল ক্লাসরুম কি? যেভাবে ব্যবহার করবেন!

মহামারী করোনাভাইরাস এর প্রভাবে স্কুল কলেজের সকল কার্যক্রম চলছে এখন অনলাইনে। স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালত কিংবা ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান ম্যানেজমেন্ট করার জন্য, বর্তমানে রয়েছে অনলাইন ভিত্তিক বিভিন্ন টুল, এক্সটেনশন, ওয়েবসাইট এবং অ্যাপস। তাদের ভেতর উল্লেখযোগ্য বেশ কয়েকটি অ্যাপস এর নাম হল: Google Meet, Google Classroom, Zoom, Skype, GoTo Meeting ইত্যাদি।

আজ আমি আপনাদের জানাতে চলেছি Google Classroom কি? এবং যেভাবে ব্যবহার করবেন Google Classroom.

গুগল ক্লাসরুম কি?
গুগল ক্লাসরুম হল: স্কুল কিংবা কলেজের জন্য, গুগল দ্বারা নির্মিত ফ্রী একটি ওয়েব সার্ভিস।
যার প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে: ছাত্র-ছাত্রীদের অনলাইন ক্লাস, অ্যাসাইনমেন্ট তৈরি, বিতরণ, গ্রেডিং, শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে নির্দিষ্ট ফাইল শেয়ার করার প্রক্রিয়াকে সহজতর করা। সর্ব প্রথম গুগল ক্লাসরুম প্রাথমিক ভাবে প্রকাশ করা হয়, ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসের ১৪ তারিখ অর্থাৎ আজ থেকে প্রায় ছয় বছর আগে। এরপর ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসের ২৭ তারিখ গুগল প্লে স্টোরে রিলিজ করা হয়। বর্তমানে গুগল ক্লাসরুম তিনটি ভিন্ন ভিন্ন অপারেটিং সিস্টেমে পাওয়া যাচ্ছে।
যেমন: অ্যান্ড্রয়েড, আইওএস এবং ওয়েবে।

গুগল ক্লাসরুম ব্যবহারের সুবিধা:
• গুগল ক্লাসরুম আপনার সময়, কাগজ, এসাইনমেন্ট তৈরি, বিতরণ এবং ক্লাস তৈরি করাকে সহজ করে তোলে।

• শিক্ষকরা সরাসরি শিক্ষার্থীদের সাথে যোগদান করতে পারেন অথবা যোগদান দিতে তাদের ক্লাসের সাথে একটি গোপন কোড শেয়ার করতে পারেন। যার ফলে মাত্র কয়েক মিনিটের ব্যবধানে, শিক্ষকরা যেকোনো ক্লাস তৈরি কিংবা শিক্ষার্থীরা জয়েন করতে পারেন।

• শুধুমাত্র এক জায়গায় বসে অর্থাৎ একটি রুম তৈরি করে কাগজবিহীন এসাইনমেন্ট তৈরি, পর্যালোচনা এবং নিশ্চিত করণের সুবিধা।


•  শিক্ষার্থীরা মাত্র একটি অ্যাসাইনমেন্ট পাতায়, তাদের সমস্ত অ্যাসাইনমেন্ট উপাদান দেখতে পারে। যেমন: Documents, Photo এবং Video. পাশাপাশি সমস্ত ইনফর্মেশন স্বয়ংক্রিয়ভাবে গুগল ড্রাইভে রাখতে পারার সুবিধা।

 • তাৎক্ষণিকভাবে শিক্ষকদের অ্যানাউন্সমেন্ট এবং আলোচনা করতে পারার সুবিধা। পাশাপাশি নির্দিষ্ট রুমে জয়েন করা শিক্ষার্থীরা, একে অপরের সাথে কথা বলতে পারে এবং প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে। 

• Zoom অথবা Skype এর থেকে বেশী সুরক্ষিত।

• গুগল ক্লাসরুমে কোনো বিরক্তিকর বিজ্ঞাপন নেই। এছাড়াও এই অ্যাপের রয়েছে আরো অনেক সুযোগ সুবিধা। যা ব্যবহার করে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা অন্যান্য অ্যাপ বা টুল এর থেকে ভালো অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারেন।

গুগল ক্লাসরুম এর খারাপ দিক:
গুগল ক্লাসরুমের কর্তৃপক্ষের মতামত অনুযায়ী, এখনো পর্যন্ত বড় কোন ধরনের অসুবিধার সম্মুখীন সাধারণ ব্যবহারকারীরা হয়নি। তবে সাধারণ ব্যবহারকারীদের মতে, গুগল ক্লাসরুম অনেকটা ধীর গতির। আবার সফটওয়্যার স্পেশালিস্টরা বলেছেন, এ সমস্যা আপডেটের মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব।

গুগল ক্লাসরুম ব্যবহারের নিয়ম:
• প্রথমে প্লে ষ্টোর অথবা অ্যাপ ষ্টোর থেকে “Google Classroom” অ্যাপস টি ডাউনলোড করুন এবং ওপেন করুন।

• এরপর “Get Started” এ ক্লিক করে Gmail এবং Password দিয়ে “Next” বাটনে ক্লিক করুন।

• এরপর “I Agree” বাটনে ক্লিক করুন এবং আপনার Role নির্বাচন করুন। 


গুগল ক্লাসরুম ডিজাইন:
গুগল ক্লাসরুমের ডিজাইন একদম স্বচ্ছ। অ্যাপসটির ইন্টারফেস সহজ হওয়ার কারণে, যেকোনো বয়সের ব্যাক্তি ব্যাবহার করতে পারে। অ্যাপসটিতে কালার হিসাবে ব্যাবহার করা হয়েছে সাদা, সবুজ, নীল, হলুদ সহ আরো বেশ কয়েকটি কালার। তবে সিংহভাগ কালার ই সাদা এবং নীল। আর আপনারা হয়তো ইতিমধ্যে জানেন যে, গুগলের প্রত্যেকটি অ্যাপ তাদের লোগোর কলারকে কেন্দ্র করে তৈরি করে থাকে।

গুগল ক্লাসরুম এর রেটিং এবং রিভিউ:
বর্তমানে গুগল প্লে স্টোরে “গুগল ক্লাসরুম” এর রেটিং 3.1/5 এবং রিভিউ রয়েছে প্রায় ১ মিলিয়নেরও বেশি। এর পাশাপশি অ্যাপ স্টোরে রেটিং রয়েছে 1.5/5 এবং রিভিউ প্রায় ২ লাখেরও বেশি।

[ বিভিন্ন গণমধ্যম বলছে, গুগল ক্লাসরুম এর রেটিং কমার পেছনে শিক্ষার্থীদের হাত আছে। এছাড়াও কারণ হিসাবে অনেক বিশেষজ্ঞ মনে করে থাকেন, শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হয়ে এ কাজ করতে পারেন। ]

গুগল ক্লাসরুম ডাউনলোড:
আপনারা “গুগল ক্লাসরুম” ডাউনলোড করতে পারবেন প্লে স্টোর এবং অ্যাপ ষ্টোর থেকে।

শেষ কথা:
বর্তমানে এডুকেশন ম্যানেজমেন্ট করার যতগুলো অ্যাপ রয়েছে, তার শীর্ষে অবস্থান করছে “গুগল ক্লাসরুম” দিন যতই সামনের দিকে এগোচ্ছে, “গুগল ক্লাসরুম” এর ব্যবহারকারীর সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের মতে, আগামী দিনগুলোতে “গুগল ক্লাসরুম” এডুকেশন ম্যানেজমেন্টে অটুট ভূমিকা পালন করবে।

ধন্যবাদ সবাইকে
Previous Post Next Post