Top 5 Apps For Bloggers

Top 5 Apps For Bloggers

বর্তমানে অনলাইন থেকে অর্থ উপার্জন করার বিভিন্ন মাধ্যম রয়েছে। এর ভিতর খুব সহজে অর্থ উপার্জন করার ক্ষেত্রে, অনেকেই বেছে নিয়েছে ব্লগিং। স্বচ্ছভাবে ব্লগিং ক্যারিয়ারকে সামনের দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য সঠিক গাইডলাইনস, ব্লগিং সম্পর্কিত টুলস এবং সফটওয়্যার এর কাজ জানা আবশ্যক।

যুগের সাথে তাল মিলিয়ে প্রতিনিয়ত তৈরি হচ্ছে: ব্লগিং ভিত্তিক অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস। কিছু অ্যাপস কাজের না হলেও, বেশ কিছু অ্যাপস রয়েছে যা আপনার ব্লগিং ক্যারিয়ারকে কয়েক গুণ সহজ করে তুলবে।

ব্লগিং ক্যারিয়ারকে আরো সহজ করার লক্ষ্যে নিচে পাঁচটি অ্যাপস তুলে ধরা হলো:

1) Gboard Keyboard
স্মার্ট ফোন দিয়ে দ্রুত সময়ের ব্যবধানে টাইপ করার অন্যতম একটি মাধ্যম Gboard Keyboard. আমেরিকান মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি গুগল, ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসের ২৬ তারিখ সর্বপ্রথম প্লে স্টোরে পাবলিশ করে জনপ্রিয় এই Gboard Keyboard. এটি ব্যবহার করা খুবই সহজ এবং ফিচার সমৃদ্ধ একটি কিবোর্ড।

Gboard অ্যাপ এর বৈশিষ্ট্য:

Glide Typing: কিবোর্ড থেকে আঙুল না সরিয়ে কাঙ্খিত কথা লেখার সুবিধা।

Voice Typing: নির্দিষ্ট বাক্য কে ভয়েস এর মাধ্যমে টেক্সটে রূপান্তরিত করার সুবিধা।
[ Example: Own Words - Voice Typing = Text ]

Handwriting: ব্যক্তিগত জীবনে আমরা যেভাবে খাতা/কাগজে লেখা লেখি করি।
ঠিক হুবহু! একইরকম লিখতে পারবেন Gboard Keyboard এর মাধ্যমে। আপনি চাইলে হাতের পাশাপশি Stylus Pen ও ব্যাবহার করতে পারেন।

Emoji Search: চ্যাটিং এর সময় মনের ভাব প্রকাশ করার জন্য, ইমোজি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই অনেকেই ইমোজির জন্য আলাদা অ্যাপ ব্যাবহার করে। তবে আপনি জেনে অবাক হবেন যে, Gboard Keyboard এর ভিতর ইমোজির জন্য আলাদা ক্যাটাগরি রয়েছে। যার ফলে আপনার ভাব প্রকাশের মাধ্যম আরো কয়েকগুণে সহজ হয়ে যাবে।

GIFs: সময়ের বিবর্তনে আজ রিএকশনের ক্ষেত্রেও বেশ পরিবর্তন চলে এসেছে। নির্দিষ্ট মোমেন্টে সঠিক GIFs ব্যাবহার করে, কাঙ্খিত মোমেন্ট কয়েকগুণ সুন্দর করা যায়। আজকাল অনেকেই GIFs এর জন্য আলাদা অ্যাপ ব্যাবহার করে। তবে আপনি যদি Gboard Keyboard ব্যাবহার করে থাকেন, তাহলে বাড়তি অ্যাপ ব্যাবহার করার দরকার নেই। কারণ: ইমোজির মত GIFs এর জন্যও, এই অ্যাপে রয়েছে আলাদা ক্যাটাগরি।

Multilingual Type:  Gboard Keyboard এ আপনি পাবেন একাধিক ভাষা ব্যাবহার করার সুযোগ।

Google Translate: নিজের ভাষাকে অন্য ভাষায় রূপান্তরিত করার জন্য অনেকেই ব্যাবহার করে Google Translate. তবে আপনি Gboard Keyboard ব্যাবহার করার ফলে, এই সুযোগটি একদম বিনামূল্যে উপভোগ করতে পারবেন। এছাড়াও এই অ্যাপে রয়েছে অনেক সুযোগ সুবিধা, যা ব্যাবহার করার ফলে আপনার লেখার অভিজ্ঞতা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পাবে।

2) Google Keep
নিজের মনের অজানা সব কথা এবং হিসাব লেখার জন্য, একটা সময় মানুষ ব্যাবহার করতো ডাইরি কিংবা নোটপ্যাড। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনে মানুষ আজ, এই একই কাজ করছে মুঠোফোন দিয়ে অর্থাৎ কিছু স্মার্টফোন ভিত্তিক নোটপ্যাড অ্যাপ দিয়ে। তার ভিতর Google Keep অন্যতম। বলে রাখা ভালো যে, Google Keep অ্যাপটি আমেরিকান মাল্টিন্যাশনাল কম্পানি গুগল এর।

Google Keep অ্যাপ এর বৈশিষ্ট্য:

• নির্দিষ্ট কথার মাঝে ফটো যুক্ত করার সুবিধা।

• টেক্সট এর পরিবর্তে ভয়েস যুক্ত করার সুবিধা।

• আপনার একাউন্টের নোটগুলি পরিবার কিংবা বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করার সুবিধা।

• আপনার বিগত দিনের নোটগুলি সার্চ এর মাধ্যেমে খুঁজে পাওয়ার সুবিধা।

• দ্রুত সময়ে নোট খুঁজে পাওয়ার জন্য, নির্দিষ্ট লেখাকে কালার করার সুবিধা।

• যেকোনো নোট পিন করার সুবিধা।

•  ভুলক্রমে কোন নোট মুছে গেলে তা পুনরুদ্ধার করার সুবিধা।

• আলাদা লেভেল তৈরি করার সুযোগ সহ, এই অ্যাপে রয়েছে “রিমাইন্ডার” ব্যবহার করার সুবিধা।

3) Grammarly
এটি একটি অনলাইন ভিত্তিক “Plagiarism” চেক করার অ্যাপ। এর পাশাপাশি এই অ্যাপ ব্যবহারের ফলে, আপনার কাঙ্খিত ব্লগের লেখার মাঝে সঠিক Spelling, Synonyms, Punctuation, Grammar এবং Plagiarism আছে কিনা, তা চেক করার জনপ্রিয় একটি টুলস।

Grammarly অ্যাপ এর বৈশিষ্ট্য:

Grammar checker: লেখার মাঝে সঠিক ব্যাকরণ আছে কিনা তা চেক করার সুযোগ।

Spelling Checker: খুব সহজেই আপনার কাঙ্খিত লেখার মাঝে বানান ভুল হলে, তা শনাক্ত করার সুযোগ।

Punctuation Correction Checker: সঠিকভাবে বিরামচিহ্ন ব্যবহারের সুযোগ।

Synonyms Checker: বিভিন্ন সময়ে নানান রকমের প্রতিশব্দ ব্যবহারের ফলে। আমাদের নির্দিষ্ট লেখাগুলো দেখতে কিংবা পড়তে অশোভনীয় দেখায়। এক্ষেত্রে Grammarly অ্যাপটি আপনাকে অনেকটাই সহযোগিতা করবে অর্থাৎ Grammarly অ্যাপ এর মধ্যে Synonyms চেক করার সুযোগ পাবেন।

Plagiarism Checker: একজন সদ্য ব্লগার প্রথম অবস্থায় বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে লেখা সংগ্রহ করে এবং নিজের বলে দাবি করে। আর এই সমস্ত লেখাগুলো কপি বা Plagiarism এর আওতাভুক্ত। যার ফলে তাদের ব্লগিং ক্যারিয়ার অল্পতেই ঝরে পড়ে। আবার অনেক সময় দেখা যায় যে, নিজের অজান্তেই অন্য ব্লগ বা ওয়েবসাইটের লেখা হুবহু কপি হয়ে যায়।

সেক্ষেত্রে Plagiarism চেক করা অনেক জরুরি হয়ে পড়ে। Plagiarism চেক করার জন্য অনলাইনে বিভিন্ন টুলস রয়েছে। এর ভিতর Grammarly অন্যতম। অনলাইনের টুলস ছাড়াও Grammarly অ্যাপের মধ্যে আপনারা পেয়ে যাবেন “Plagiarism Checker” এর ফলে আপনার কাঙ্খিত ব্লগ বা ওয়েবসাইটের লেখা, কপি কিংবা Plagiarism এর আওতাভুক্ত আছে কিনা, তা চেক করার সুযোগ পাবেন। এছাড়াও এই অ্যাপস এর প্রিমিয়াম মেম্বারদের জন্য রয়েছে, আরও বেশ কিছু টুলস। তবে সাধারণ একজন ব্লগারের জন্য, এই অ্যাপের মধ্যে যে বৈশিষ্ট্য গুলো রয়েছে তা এক কথায় যথেষ্ট।

4) PixelLab
একটা সময় ছিল!
যখন সাধারন গ্রাফিক্সের কাজ করার জন্য, প্রয়োজন পড়তো কম্পিউটার কিংবা ল্যাপটপ। কিন্তু বর্তমানে টুকিটাকি গ্রাফিক্সের কাজ স্মার্টফোন দিয়েই করা সম্ভব। গ্রাফিক্সের কাজ করার জন্য, স্মার্টফোন ভিত্তিক বিভিন্ন অ্যাপস রয়েছে। তাদের ভিতর উল্লেখযোগ্য: Adobe Illustrator, Adobe Spark, Infinite Painter, Canva, PixelLab সহ আরো বেশ কিছু অ্যাপ। তবে PixelLab অ্যাপ এর ভূমিকা অপরিসীম।
কারণ: খুব অল্প সময়ের মধ্যে PixelLab দিয়ে লোগো, ব্যানার, পোষ্টার, ফ্লাইয়ার এবং থাম্বনেইল তৈরি করা সম্ভব। ব্যক্তিগতভাবে আমিও ২০১৭ সাল থেকে ব্যাবহার করে আসছি “PixelLab

PixelLab অ্যাপ এর বৈশিষ্ট্য:

3D Text Create: 3D টেক্সট তৈরি এবং কাস্টমাইজেশনের সুবিধা।

Text Effect: আপনার লেখাকে কয়েক ডজন ইফেক্ট এর আওতায় আনতে পারবেন। তার ভিতর উল্লেখযোগ্য: Stroke, Background, Reflection, Emboss, Mask, Shadow, Inner and Shadow.

Text Color: যে কোন প্রকারের লেখা কিংবা এলিমেন্টস কে বিভিন্ন কালারে রূপান্তরিত করতে পারবেন। তার পাশাপাশি রয়েছে গ্রেডিয়েন্ট এর সুবিধা।

Text Font: এই অ্যাপে পাবেন ১০০+ ফন্ট যা ব্যবহার করে লোগো, ব্যানার, পোষ্টার, ফ্লাইয়ার এবং থাম্বনেইল কয়েক গুণ সুন্দর করতে পারবেন।

Remove Background: যেকোনো ফটোর অবজেক্ট নিমিষেই রিমুভ করার সুবিধা। অনেক সময় ফটোর অব্যবহৃত অবজেক্ট রিমুভ করার জন্য, আমরা বিভিন্ন টুল বা সফটওয়্যার ব্যবহার করি। তবে আপনি জেনে অবাক হবেন যে, এই সুবিধা ভোগ করার জন্য আপনার দ্বিতীয় কোন টুল বা সফটওয়্যার এর প্রয়োজন পড়বে না। যদি আপনি ব্যবহার করে থাকেন PixelLab App.

Image Effect: যেকোনো ফটো সাধারণ থেকে অসাধারণ করার লক্ষ্যে, অনেকেই ব্যবহার করে ফটো এডিটিং অ্যাপ। কিন্তু আপনি যদি PixelLab ব্যবহার করে থাকেন। তাহলে এই সুবিধা উপভোগ করার জন্য, আপনার দ্বিতীয় কোন অ্যাপসের শরণাপন্ন হওয়া লাগবে না। কারণ: PixelLab দিয়েই আপনি আপনার ফটোতে বেশকিছু ইফেক্ট জুড়ে দিয়ে, করতে পারেন আকর্ষণীয়।

Create Meme: বর্তমানে অনলাইনে Meme খুবই জনপ্রিয় একটি বিষয়। কোন বিষয়বস্তু কে কেন্দ্র করে, হাসি ঠাট্টার মাধ্যম তৈরি করাকে Troll বা Meme বলে। আপনি চাইলে PixelLab এর ভিতরের টেমপ্লেট ব্যবহার করে, খুব অল্প সময়ে তৈরি করে নিতে পারেন Troll বা Meme.

5) Google Analytics
এটি এমন একটি গুগল এর টুলস, যা আপনার ওয়েবসাইটের সমস্ত ডাটা কালেক্ট করে এবং দিন, সাপ্তাহিক, মাসিক, বাৎসরিক রিপোর্ট আকারে প্রকাশ করে। একজন ব্লগারের জন্য Google Analytics অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে আমরা যেমন হিসেব-নিকেশ করে থাকি, হুবহু Google Analytics ও একই কাজ করে।

Google Analytics অ্যাপ বৈশিষ্ট্য:

• ওয়েবসাইটে এই মুহূর্তে কতজন ভিজিটর রয়েছেন তা দেখার সুযোগ।

• প্রতিটি ভিজিটর কোন পোস্ট গুলো পড়েছে তা সম্পর্কে জানা যাবে।

• প্রতিটি ভিজিটরের লোকেশন জানা যাবে অর্থাৎ একজন ভিজিটর কোন দেশ থেকে ওয়েবসাইট ভিজিট করেছে। তা সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া যাবে।

• একজন ভিজিটর কোন ডিভাইস ব্যবহার করে, ওয়েবসাইট ভিজিট করছে তার সম্বন্ধে জানা যাবে।

• একজন ভিজিটর কিভাবে ওয়েবসাইটে এসেছে তা সম্বন্ধে জানা যাবে অর্থাৎ সে কি সরাসরি ওয়েবসাইট ভিজিট করেছে নাকি সোশ্যাল মিডিয়া থেকে এসেছে।

• একজন ভিজিটর কোন ব্রাউজার ব্যাবহার করে ওয়েবসাইট চালাচ্ছে, তা সম্বন্ধে ধারণা পাওয়া যাবে। 

• একজন ভিজিটর একটি পেজ কয়বার ভিজিট করছে তা সম্বন্ধে ধারণা পাওয়ার সুবিধা।

• ওয়েবসাইটের বাউন্স রেট সম্বন্ধে ধারণা পাওয়ার সুযোগ।

• একজন ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইটে এসে কতক্ষণ সময় ব্যয় করছে, তার গড় হিসাব দেখার সুযোগ।

•  দিন বা রাতের কোন সময় আপনার ওয়েবসাইটে বেশি ভিজিটর আসে তা জানার সুবিধা সহ জানতে পারবেন আরও অনেক কিছু।

[ আলোচনায় উল্লেখিত অ্যাপগুলো ডাউনলোড করতে, কাঙ্খিত অ্যাপগুলোর নামের উপর “ক্লিক” করুন ]

ধন্যবাদ সবাইকে

Previous Post Next Post